ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় ঢাকার শেয়ারবাজারে বড় ধসডিএসইর লেনদেন কমলেও বেড়েছে সিএসইতেআগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট হবে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকারআয়কর কমানোর সুযোগ নেই: আব্দুর রহমান খানভারতের শেয়ারবাজার এক দিনে ২০ লাখ কোটি রুপি হারিয়েছে
No icon

আধুনিক বাণিজ্যিক কেন্দ্র হচ্ছে মোংলা বন্দর

সম্প্রতি ‘মোংলা বন্দর সুবিধাদি সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরটিকে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক হাবে রূপান্তর করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, ব্যবহারকারী ও অংশীজনরা। এর মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রমের সক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে বলেও আশা করা হচ্ছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমপিএ)-এর উপ-পরিচালক মো. মাকরুজ্জামান জানান, গত ২৫ মার্চ এমপিএ’র সঙ্গে চীন সরকারের চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) জি টু জি চুক্তি সই করে।

এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এ অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৪,০৬৮.২২ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৪৭৫ দশমিক ৩২ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ৩ হাজার ৫৯২ দশমিক ৯০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে চীনা সরকার। প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক বাসস-কে জানান, প্রকল্পের আওতায় ৩৬৮ মিটার দীর্ঘ দুটি কনটেইনার জেটি, আধুনিক কনটেইনার টার্মিনাল, ডেলিভারি ইয়ার্ড, বহুতল গাড়ি সংরক্ষণাগার, সানকেন রেক অপসারণ ব্যবস্থা, মূল সড়ক উন্নয়ন ও শিট পাইলিং নির্মাণ কাজ করা হবে। এ ছাড়া, ৮৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার লোডেড কনটেইনার ইয়ার্ড, ৩৪ হাজার ১৭০ বর্গমিটার খালি কনটেইনার ইয়ার্ড ও ৪ হাজার ২৬০ বর্গমিটার ঝুঁকিপূর্ণ মালামাল হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পে যুক্ত করা হবে আধুনিক মালামাল হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি ও স্বয়ংক্রিয় অপারেশনাল সিস্টেম। যার মধ্যে থাকবে, বাংলাদেশের প্রথম চালকবিহীন ক্রেন সিস্টেম। এটির কাজ শেষ হলে মংলা বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহন ক্ষমতা ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা ১.৫ লাখ থেকে বেড়ে ৪ লাখ টিইউ হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. সামিউল হক বলেন, ‘এই বিনিয়োগ শুধু অবকাঠামোগতই নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সক্ষমতাও বাড়াবে। এটি চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করবে। পাশাপাশি দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে কৌশলগত দিক দিয়ে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।’

এদিকে, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বাসস-কে বলেন, প্রকল্প সম্পন্ন হলে মোংলা পূর্ণাঙ্গ স্বয়ংক্রিয় বন্দরে রূপান্তরিত হবে। বর্তমানে বন্দরের কাঠামো ও সক্ষমতা দুটোই বেড়েছে। এখন বন্দটির কার্যকারিতাও আগের চেয়ে বেশি উন্নত। পদ্মা সেতু চালু ও রেল সংযোগ স্থাপনের ফলে পণ্য লোড-আনলোডে সময় কমে গেছে। ফলে বন্দরে উল্লেখযোগ্য হারে বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন বেড়েছে।

মোংলা পোর্ট বার্থ অ্যান্ড শিপ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ জাহিদ হোসেন বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পটির কাজ পুরোপুরি শেষ হলে বন্দরের গুরুত্ব বহুগুণে বেড়ে যাবে।

খুলনা সিভিক সোসাইটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, চীনের সঙ্গে মোংলা বন্দর আধুনিকায়নের চুক্তিটি দেশের জন্য ইতিবাচক। তবে সরকারকে নজর রাখতে হবে, যাতে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণও নিশ্চিত হয়।

১৯৫০ সালে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে প্রবাহিত পশুর নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় মংলা বন্দর। বর্তমানে পাঁচটি জেটি এবং ২২টি নোঙর পয়েন্ট রয়েছে। যেখানে ৪৭টি জাহাজ একযোগে নোঙর করতে পারে। খবর- বাসসের