বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিক বা প্রান্তিকে ৭৭৬ বিলিয়ন বা ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ঋণ করবে বলে আশা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়। সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, বছরের শেষ প্রান্তিকে আর কখনোই সরকার এত পরিমাণ অর্থ ঋণ করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় আগে যা ধারণা করেছিল, চতুর্থ প্রান্তিকে ঋণের পরিমাণ হবে সেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭৬ বিলিয়ন বা ৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার কম। মূলত অক্টোবরে সরকারের রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয় শেষ পর্যন্ত ঋণ করার লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস করেছে। এ বছর চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে ক্যালিফোর্নিয়ার মতো রাজ্যে রাজস্ব আদায়ের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে বছরের শেষ ভাগে অর্থাৎ অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
পরবর্তী নিলামে সরকার বিল, নোট ও বন্ড ছেড়ে কত অর্থ তুলবে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন হিসাবে তা জানা যাবে। আজ মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সকালে তার বিস্তারিত বিবরণ জানা যাবে। সরকারের এই ঘোষণার পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের বন্ড-বিলের সুদহার তাৎক্ষণিকভাবে কমতে শুরু করে, যদিও কিছুক্ষণ পরই তা আবার বেড়ে যায়। গত কয়েক সপ্তাহে নানা কারণেই বন্ডের সুদহার বাড়তে শুরু করে। একটি কারণ হলো, সরকার ঠিক কী পরিমাণ অর্থ ঋণ করতে যাচ্ছে, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা। তবে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার অর্থ হলো, অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি প্রান্তিকে বিনিয়োগকারীদের চাহিদামতো বন্ড ছাড়বে না; বরং তার চেয়ে কম ছাড়বে। অর্থ মন্ত্রণালয় চাহিদার তুলনায় কম বন্ড ছাড়লে দাম কমে যায় এবং পরিণামে বন্ডের সুদহার বেড়ে যায়।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে তারা ৮১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ঋণ করতে চায়। সেটাও বছরের প্রান্তিকে ঋণের রেকর্ড হয়ে থাকবে। এদিকে বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে মার্কিন সরকার ১ লাখ ১ হাজার কোটি ডলার ঋণ করেছে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের মে মাসের প্রাথমিক পূর্বাভাসের চেয়ে ২৭৭ বিলিয়ন বা ২৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বেশি। মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকার কী পরিমাণ ঋণ নিতে পারবে, তার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। গত কয়েক বছরে নাগরিকদের প্রণোদনা দেওয়াসহ নানা কারণে দেশটির জাতীয় ঋণ আইনি সীমা ৩১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার ছুঁয়ে ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে অনেক তর্ক-বিতর্কের পর গত মে মাসে ঋণসীমা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। তা না হলে গত ৫ জুনের পর দেশটি ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে যেত। এদিকে ঋণসীমা স্থগিত হলেও এ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান কমিয়েছে।