যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর গতকাল সোমবার দুপুরের পর ভারতের পেট্রাপোল থেকে পণ্যবোঝাই কোনো ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি কিংবা কোনো ট্রাক ভারতে যায়নি। বন্দরে পণ্য খালাসও বন্ধ রয়েছে। বেনাপোল ও পেট্রাপোলে এখন দেড় হাজারের বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা রয়েছে।
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই অস্থিরতা শুরু হয়। পণ্য ওঠানো-নামানো ঠিকাদার ও শ্রমিক সরদারদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের সমর্থক হওয়ায় তাঁরা বন্দর থেকে সরে পড়েন। মূলত এ কারণে পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় পণ্যবোঝাই কোনো ট্রাক ভারতের পেট্রাপোল থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে ছেড়ে আসেনি। ফলে গতকাল সাড়ে তিনটার পর থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১১৫টি ট্রাক বোঝাই পণ্য আমদানি এবং ৩৯টি ট্রাক বোঝাই পণ্য রপ্তানি হয়েছে। কিন্তু আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত যেহেতু বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হয়নি, সে কারণে বাংলাদেশে ঢুকতে এক হাজারের বেশি ট্রাক পেট্রাপোলে অপেক্ষা করছে। ভারতে যেতে বেনাপোলে পণ্যবোঝাই ৬০টি ট্রাক অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় ৬০০টির মতো পণ্যবোঝাই ট্রাক বেনাপোলে রয়েছে। কিন্তু পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না।
বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বেনাপোল ও পেট্রাপোলে পণ্যবোঝাই দেড় হাজারের বেশি ট্রাক আটকে রয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি ছিল। আমরা বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। দ্রুত কার্যক্রম শুরু হবে বলে আমরা আশা করছি।’
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে সপ্তাহের প্রতিদিনই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়। আটকে থাকা পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগই শিল্পের কাঁচামাল, রাসায়নিক দ্রব্য, মেশিনারিজ পণ্য। পাশাপাশি কিছু পচনশীল পণ্যও রয়েছে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতি এড়াতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম দ্রুত স্বাভাবিক করার দাবি জানান।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর জন্য বিএনপি ও ব্যবসায়ী নেতা এবং প্রশাসনের ব্যক্তিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত বন্দর সচল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’