পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের জরুরি (বেইলআউট) ঋণ প্রদানের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ইতোমধ্যে কর্মকর্তা পর্যায়ে চুক্তিও শেষ করেছে দুই পক্ষ। গতকাল বুধবার দিন শেষে ওয়াশিংটনে আইএমএফের সদর দপ্তর থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর এএফপির। দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে পাকিস্তান। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ নেই। এমনকি, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার জন্য নতুন করে বৈদেশিক বিনিয়োগও হচ্ছে না পারমাণবিক শক্তিধর দেশটিতে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতির গতি আকাশচুম্বী। মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের মুদ্রা রুপি ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ডলারের সংকটে আমদানি করা যাচ্ছে না। এতে করে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিল্পকারখানার উৎপাদন। তাই দেশটিকে সম্ভাব্য খেলাপি এড়াতে সহায়তা করা হচ্ছে।
আইএমএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এর কার্যনির্বাহী বোর্ড ওয়াশিংটন সদর দপ্তরে বৈঠক করেছে এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ৯ মাসের মধ্যে তহবিল প্রকাশ করতে সম্মত হয়েছে।
সংকট-বিধ্বস্ত দেশটি প্রথম ধাপে প্রায় ১২০ কোটি ডলার পাবে। বাকিটা আগামী ৯ মাসের মধ্যে আইএমএফ হস্তান্তর করবে। ঋণখেলাপি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। দেশটির কাছে এক মাসের আমদানির জন্য বিদেশি মুদ্রা পর্যাপ্ত পরিমাণে ছিল না। চলতি সপ্তাহে মিত্র সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকেও তহবিল পেয়েছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টায় বেইলআউট একটি বড় পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এটি তাৎক্ষণিক থেকে মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।
পাকিস্তানকে জরুরি সহায়তা ঋণ দেওয়া নিয়ে আইএফএমের কর্মকর্তা নাথান পর্টার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি এটি ঘোষণা করতে পেরে খুবই আনন্দিত হচ্ছি যে পাকিস্তানি ও আইএমএফ কর্মকর্তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে আলোচনার পর জরুরি সহায়তানীতির মাধ্যমে পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার দেওয়ার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।’
ঋণদাতা এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের মধ্যে ২০১৯ সালের বেলআউট চুক্তির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্মতির অভাবের কারণে গত ডিসেম্বর থেকে আইএমএফের বেলইআউট আটকে ছিল।
সূত্র : বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা