মার্কিন ডলারের পরিবর্তে রুপিতে বাণিজ্যের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের সময়, উভয় দেশ একে অপরের মধ্যে সহজে অর্থ লেনদেনের জন্য রিয়েল-টাইম পেমেন্ট লিঙ্ক স্থাপন করেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুলনাসের আলশালি দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতীয়দের ভ্রমণকে আরও সহজ করতে চায়। ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একদিনের সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, যখনই দুই নেতা (মোদি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ) সাক্ষাৎ করেন, সবার কাছে একটি বার্তা যায় যে তাদের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। তবে তিনি আরও বলেন, একসঙ্গে আরও বেশি কাজ করার সুযোগ সবসময়ই থাকে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ সেপ্টেম্বরে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত সফর করবেন। দ্য হিন্দু রাষ্ট্রদূতকে জিজ্ঞেস করেছিল যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বছরের নভেম্বরে আবুধাবিতে অনুষ্ঠেয় কপ-২৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কি না? এ প্রশ্নে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তিনি এখনো কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি পাননি, তবে তিনি আশাবাদী নরেন্দ্র মোদি এই সম্মেলনে যোগ দিতে পারবেন। তিনি বলেন, আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। রুপি ও দিরহামে লেনদেনের জন্য ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে চুক্তিটি এমন এক সময়ে হয়েছে যখন ভারত রাশিয়ার সাথে রুবল এবং ইরানের সাথে রুপি এবং রিয়াল লেনদেনে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূতকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে মোদির সাথে তার এই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে কি না এবং রুপি এবং দিরহাম লেনদেন দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যকে বাড়িয়ে তুলবে কি না। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের আলোচনা পুরোপুরি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর কেন্দ্রীভূত হয়েছে এবং আমরা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে লেনদেন নিয়ে আলোচনা করিনি। এই চুক্তির উদ্দেশ্য ব্যবসা বাড়ানো নয় বরং এর উদ্দেশ্য লেনদেনের খরচ কমিয়ে ব্যবসাকে সহজতর করা, মুদ্রা পরিবর্তন করা সহজ করা এবং অবশ্যই, ফলস্বরূপ, ব্যবসায়ীরা আরও ব্যবসা করতে উৎসাহিত হবেন। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ভারত বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের পছন্দের মুদ্রায় বাণিজ্য করতে পারবেন। ইউক্রেন যুদ্ধের পরে, অনেক দেশ ডলারে বাণিজ্য করার বিকল্প খুঁজছে। ভারত-সংযুক্ত আরব আমিরাত চুক্তিও কি একই উদ্দেশ্যে?
এ প্রশ্নের জবাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেন, সবসময় এমন কেউ থাকবে যে সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করবে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ভারতের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মাত্র। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক, আমদানিকারকদের তাদের ব্যবসার জন্য আরও বিকল্প থাকা উচিৎ। এটা নির্ভর করবে তারা কীভাবে কাজ করতে চায় তার ওপর।