ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ২৫-৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে : আহসান এইচ মনসুরসাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষে খান ব্রাদার্সদুই বিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের শেয়ারবাজারে দর পতনে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ বাংলাদেশের শিল্প খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগে আগ্রহী কাতার : শিল্পমন্ত্রী
No icon

ভারতের আমদানি–রপ্তানি ও বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে

অক্টোবরে ভারতের আমদানি ও রপ্তানি উভয়ই বেড়েছে। গত মাসে দেশটির রপ্তানি প্রায় এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হারে বেড়েছে। সে মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৩। একই সময় আমদানিও অনেকটা বেড়েছে, ১২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে তা ৬৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। দীর্ঘদিন পর রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির মুখ দেখল ভারত। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, আমদানি নতুন উচ্চতায় ওঠার কারণে এই সময় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ৩১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ১৪০ কোটি ডলারে উঠেছে। এর আগে জুলাইয়ে যা আগের সর্বোচ্চ ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারে উঠেছিল।

ভারতের বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল সাংবাদিকদের ভালো সংবাদ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথম ভাগেও দেখা যাচ্ছে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত। গত বছরের পরিসংখ্যান ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় ওঠার আশা করা হচ্ছে। বিশ্ববাজারের পণ্যের দাম কমার মধ্যেই এই ধারা দেখা যাচ্ছে। তবে ভারতের বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল পরিসংখ্যান নিয়ে পূর্বাভাস দেননি। তিনি বলেছেন, রপ্তানি অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করবে, যেমন উন্নত দেশে পণ্যের দাম, মুদ্রার বিনিময় ও সুদহার, যদিও এসব কারণে উন্নত দেশের চাহিদা কমে গেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতের পণ্য রপ্তানি রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। সেবার দেশটির পণ্য রপ্তানি হয় ৪৫১ বিলিয়ন বা ৪৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার, যদিও বছরের দ্বিতীয় ভাগে কিছুটা ধীরগতি ছিল। এতে অবশ্য এবার কিছুটা সুবিধা হবে, অর্থাৎ বছরের দ্বিতীয় ভাগে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বেশি দেখাবে। বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়া নীতিপ্রণেতাদের জন্য উদ্বেগের; কারণ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হলে বা ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়লে এই বাণিজ্য ঘাটতির কারণে রুপির দরপতন হবে।

দু-এক বছর ধরেই রুপির দরপতনের ধারা চলছে। গত শুক্রবার ডলারের বিপরীতে রুপির সর্বোচ্চ দরপতন হয়, সেদিন ডলারের বিপরীতে ৮৩ দশমিক ৪২ রুপি পাওয়া গেছে। পরে অবশ্য রুপি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। ডলার আয়ের চেয়ে খরচ বেশি হলে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার কমতে থাকে, যা যেকোনো অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক।

ভারতের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিআরএর প্রধান অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ার বলেন, দেশের উৎসবের মৌসুমের দিনপঞ্জিতে পরিবর্তন এসেছে, সে জন্য ধারণা করা হয়েছিল, অক্টোবরে বাণিজ্য ঘাটতি ২২ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলারে উঠবে। কিন্তু বাণিজ্য ঘাটতি তার চেয়ে বেশি হওয়ার কারণ হলো সোনা ও তেলের আমদানি বেড়ে যাওয়া; রপ্তানি অবশ্য আমাদের প্রত্যাশামতোই হচ্ছে। নভেম্বরে তেল ব্যতীত অন্যান্য পণ্যের আমদানি কমে আসবে। এ মাসে বেশ কিছু ছুটি থাকায় আমদানির পাশাপাশি রপ্তানিও কমে আসবে বলে তাঁর ধারণা। ফলে এ মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ২২ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অক্টোবরে ভারতের সোনা আমদানি ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৭২০ কোটি ডলারে উঠেছে। আগের বছর যা ছিল ৩৭০ কোটি ডলার, তবে অক্টোবরের আগপর্যন্ত ভারতের রপ্তানির চিত্র ভালো ছিল না। ভারতের বাণিজ্য মহলের একাংশ মনে করছে, বিশ্ববাজারে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে রপ্তানি কমেছে, যদিও শেষ পর্যন্ত অক্টোবরে এসে তা বাড়ল। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র অবাধ বাণিজ্য চুক্তি, যদিও এখন পর্যন্ত খুব বেশি দেশের সঙ্গে ভারত তা করতে পারেনি, তবে ভারতীয় পণ্যের বাজার বড়। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে আরও কিছু দেশের সঙ্গে ভারত বাণিজ্য চুক্তি করতে পারে।