টানা একযুগ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রাজস্ব আয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারায় ঋণ নিয়ে ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে সরকারকে। এতে বাড়তি ঋণের বোঝা চাপছে সরকারের কাঁধে। চলতি অর্থবছরেও ২০২৪-২৫ রাজস্ব আয়ের একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা। ফলে অর্থবছর শেষে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ঘাটতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে অর্থবছর শেষে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এনবিআর।
এদিকে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ‘উপায় খুঁজতে’ গত ৩১ ডিসেম্বর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। বৈঠকে রাজস্ব আদায়ে আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মানুষকে হয়রানি না করেই কর্মকর্তাদের ন্যায্য রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বারোপ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
অপরদিকে রাজস্ব আদায় বাড়াতে নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের (সংশোধনী) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে বেশ কিছু পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট এবং শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। আগামী কয়েক দিনের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপণ জারি করবে বলে জানা গেছে।
সাধারণত পরবর্তী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনার সময় কর কাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটায় সরকার। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পরিবর্তন করা হয়। সংশোধন সাপেক্ষে সংসদে অনুমোদিত হওয়ার পর তা কার্যকর করা হয়। কিন্তু প্রয়োজন অনুসারে অর্থবছরের যে কোনো সময় পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে কর কাঠামোয় কিছু পরিবর্তন আনতে পারে সরকার। কিন্তু এবার অর্থবছরের মাঝপথে ৩৪টির মতো পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধি কিংবা নতুন করে ভ্যাট আরোপ করার নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে কিছু কিছু পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে সম্পূরক ও আবগারী শুল্কও বাড়ানো হচ্ছে। মূলত রাজস্ব আয়ে গতি ফিরিয়ে লক্ষ্য অর্জনের পথেই হাঁটতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।