প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আরও ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬৩৪৬ পয়েন্টে উঠেছে। সূচকের এ অবস্থান গত ছয় মাসের সর্বোচ্চ। গত ১৯ জুলাই থেকে সূচকটি ৬৩৬৫ পয়েন্ট থেকে একটু একটু করে কমছিল। গত ২৮ নভেম্বর ৬২০২ পয়েন্ট পর্যন্ত নামে। ডিসেম্বরজুড়ে প্রায় স্থির থাকলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্রমেই বাড়ছে সূচক।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল বুধবারের বৃদ্ধিসহ সর্বশেষ ছয় কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচক ৭৮ পয়েন্ট বেড়েছে। মাঝে গত ৯ জানুয়ারির ১ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমেছিল। ওই দিনের সামান্য হ্রাস বিবেচনায় নিলেও সর্বশেষ ১০ কার্যদিবসে সূচকটি প্রায় ১১৩ পয়েন্ট বেড়েছে। ডিএসইএক্স সূচকে ৩১৭ শেয়ার অন্তর্ভুক্ত থাকলেও এ বৃদ্ধিতে গুটিকয় শেয়ারের অবদানই বেশি। গত ১০ জানুয়ারি থেকে সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রাখা শীর্ষ ১০ শেয়ারই সূচকে প্রায় ৪৫ পয়েন্ট যোগ করেছে।
তারপরও সূচকের এ বৃদ্ধিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্টরা। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির শীর্ষ পর্যায় থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার সংক্রান্ত ঘোষণার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা শঙ্কা কাজ করছে। এর মধ্যেও কিছু শেয়ারের দর বাড়ছে, সূচকও বাড়ছে। এর অর্থ শঙ্কা সত্ত্বেও অধিকাংশ বিনিয়োগকারী বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকালের সূচক সাড়ে ১৪ পয়েন্ট বৃদ্ধিতে একক অবদান ছিল বিকন ফার্মার। শুধু এ শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে প্রায় ১৩ পয়েন্ট। টানা প্রায় সাড়ে ৯ মাস পর গতকালই শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইস ছেড়ে সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। বিকন ফার্মা ছাড়াও স্কয়ার ফার্মা, সি পার্ল হোটেল এবং এডিএন টেলিকমের দরবৃদ্ধিতে গতকাল সূচক বেড়েছে সাড়ে ৩ পয়েন্ট। বিপরীতে কনফিডেন্স সিমেন্ট এবং কোহিনূর কেমিক্যালের দর হ্রাসে যথাক্রমে সূচকটি প্রায় ১ পয়েন্ট এবং পৌনে ১ পয়েন্ট হারায়। শুধু গতকাল নয়, সাম্প্রতিক সময়ের সূচকের বৃদ্ধি পর্যালোচনায় একই চিত্র মিলেছে।
এদিকে সূচক বাড়লেও গতকাল ফ্লোর প্রাইসের ওপরে থাকা বেশির ভাগ শেয়ার দর হারিয়েছে। ডিএসইতে ৭১ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ৯১টি। ফ্লোর প্রাইস বা আগের দিনের দরে সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ১৮৭টি। ক্রেতার অভাবে এদিনও ৩৯ কোম্পানির একটি শেয়ারও কেনাবেচা হয়নি।
খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল আর্থিক ও বীমা খাত ভিন্ন অন্য সব খাতের শেয়ারদর বেড়েছে। তুলনামূলক বেশি বেড়েছে প্রকৌশল, খাদ্য, সিমেন্ট, তথ্য-প্রযুক্তি খাতের শেয়ার। এদিন বীমা খাতের অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে। খাতটির লেনদেন হওয়া ৫৫ শেয়ারের মধ্যে ৪৫টিরই দর কমেছে। এতে গড়ে খাতটির শেয়ারদর কমেছে সোয়া ১ শতাংশ।