দূষণ বেশি দেখিয়ে প্লাস্টিক পণ্য বর্জনে উঠেপড়ে লাগার পেছনে কোন দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)। শিল্প ধ্বংস করে সরকার আইন বাস্তবায়ন করতে পারবে কিনা তা আবারো ভেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।
বর্তমানে সুপারশপে প্লাস্টিকের শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ। আগামী মাস থেকে কাঁচাবাজারেও বাস্তবায়ন করা হবে এই আইন। কিন্তু বিকল্প কী? একদিকে যেমন উঠেছে সেই প্রশ্ন, তেমনি সামনে এসেছে ব্যাগসহ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারকদের কী হবে- সেই প্রশ্নও।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধে কোন দুরভিসন্ধি কাজ করছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি জানায় বিজিএপিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, এতে যেমন ক্ষতির মুখে পড়বে ৬ হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ, কর্মহীন হবে কয়েক লাখ মানুষ। এছাড়া ঝুঁকির মুখে ফেলবে বিদেশি বিনিয়োগও।অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামিম আহমেদ বলেন, প্লাস্টিকের পুনঃচক্রায়নের মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে হবে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো এবং মহাসাগরীয় প্লাস্টিক দূষণ রোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এসময় তিনি জাতিসংঘের পরিবেশ অ্যাসেম্বলির একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০৩০ সাল পর্যন্ত পণ্যটি বন্ধে সময় নিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যে লক্ষ্যে ২০২২ সালে প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ বন্ধ করে দেয় তা গত ২২ বছরে অর্জন করা সম্ভব হয়নি। সাশ্রয়ী মূল্য, গুণগত মান এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য শপিং ব্যাগের বিকল্প ছাড়া উৎপাদন ও সরবরাহ সম্ভব হয়না।সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধ হলে প্লাস্টিক খাতের ৬০০০ হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে লক্ষাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি হারাবেন। বিকল্প ব্যবহার-উপযোগী পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত না করেই এই আইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব কিনা সেই প্রশ্নও তোলেন তারা। সরকারি পথে না চলে ব্যবসায়ীদের দেখানো পথে চলার তাগিদ দিয়ে প্লাস্টিকের রিসাইক্লিং ও রিইউজ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।সংগঠনটির যুক্তি, পরিবেশ উপদেষ্টার দেখানো পথে হাঁটলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিল্পবিনিয়োগ, বাড়বে পণ্যমূল্য আর তাদের দেখানো পথ সারকুলার ইকনোমিতে জোর দিলে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তেলার লক্ষ্য পূরণ হলেও, ক্ষতি হবে না কারও। আর আইনের কঠোর প্রয়োগে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় চান তারা।
এর আগে বহুবার এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও কাজ হয়নি জনসচেতনতা তৈরিতে, আর কোনো আলোচনার টেবিলে ডাকাও হয়নি অংশীজন ব্যবসায়ীদের- এমন দাবিও উঠে আসে সংবাদ সম্মেলনে।