
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে সই করার সময়সীমা মাত্র ক’দিন বাকি। ১ আগস্টের মধ্যে যদি দেশটির প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারেন, তাহলে একযোগে একাধিক পণ্যে উচ্চ মাত্রার শুল্ক কার্যকর করতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে মার্কিন জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হওয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য—যেমন কফি, চাল, কোকোয়া, পোশাক ও ইলেকট্রনিক্স—এসবের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যেতে পারে, যা ভোক্তাদের ব্যয়ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জে ফেলবে। একই সঙ্গে বাড়তে পারে মূল্যস্ফীতি ও কমে যেতে পারে খুচরা বাজারে চাহিদা।
যুক্তরাষ্ট্রের কফির ৯৯ শতাংশ আমদানি হয়। তার ৩০ শতাংশ আসে ব্রাজিল থেকে, যেখানে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। ভিয়েতনামের কফিতেও ২০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। মার্কিন কফিপ্রেমীদের জন্য এটি বড় ধাক্কা।
চীন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ থেকে আসে আমদানিকৃত পোশাকের সিংহভাগ। এর মধ্যে চীনের পণ্যে ৩০ শতাংশ ভিয়েতনামে ২০ শতাংশ এবং বাংলাদেশি পোশাকে সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে শার্ট, সোয়েটারসহ দৈনন্দিন পোশাকের দামও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত চালের ৬০ শতাংশ সুগন্ধি জাতের—যা মূলত আসে থাইল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তান থেকে। এই তিন দেশের চালের ওপর যথাক্রমে ৩৬ শতাংশ, ২৬ শতাংশ ও ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে।
আইভরি কোস্ট ও ইকুয়েডর থেকে আসা কোকোয়া বিন এবং ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে আমদানিকৃত কোকোয়া বাটার—সবগুলোতেই নতুন করে ১৯ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা এসেছে।
সার্বজনীনভাবে তামার ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা বিশেষ উদ্বেগ তৈরি করেছে নির্মাণ ও ইলেকট্রনিক্স খাতে। এতে করে নির্মাণ সামগ্রী এবং প্রযুক্তিপণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিসিজির মতে, শুধু তামার ওপর শুল্ক আরোপেই আমদানি ব্যয় বছরে ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে। একইসঙ্গে ভোক্তারা খরচ কমিয়ে দিলে মার্কিন অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
যদিও অনেক দেশের সঙ্গে এখনো দরকষাকষি চলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—১ আগস্টের পর শুল্ক আরোপে আর ছাড় দেওয়া হবে না। এ সময়সীমার মধ্যে সমঝোতা না হলে আমদানিকৃত পণ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন শুল্ক কার্যকর হবে।